পেশায় তিনি পাইলট। পাশাপাশি ইউটিউবের জন্য ভিডিও বানান। অদ্ভুত এক কাণ্ড করেছিলেন তিনি। ইউটিউব ভিডিও বানানোর জন্য নিজেই উড়োজাহাজ ধ্বংস করেছিলেন। পরে সেই ভিডিও নিজের ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। এই কাণ্ডের জন্য আইনের আওতায় আনা হয়েছে তাঁকে। আর এ জন্য ২০ বছরের বেশি সময় জেলে কাটাতে হতে পারে।
বিচিত্র এই ঘটনা ঘটিয়েছেন ইউটিউবার ট্রেভন জ্যাকব। ২০২১ সালের নভেম্বরে একটি ভিডিও আপলোড করেছিলেন তিনি। শিরোনাম ছিল, ‘আমি আমার উড়োজাহাজ ধ্বংস করেছি।’ এতে দেখা যায়, ক্যালিফোর্নিয়ার দক্ষিণাংশের পাহাড়ি এলাকার আকাশে একটি এক ইঞ্জিনের ছোট উড়োজাহাজ নিয়ে উড়ছেন জ্যাকব। কিন্তু তাঁর উড়োজাহাজটির ইঞ্জিনে সমস্যা দেখা দিয়েছে। পরে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়।
বিধ্বস্ত হওয়ার আগে উড়োজাহাজটি থেকে প্যারাস্যুট নিয়ে নিরাপদে বেরিয়ে আসেন ২৯ বছরের জ্যাকব। এ সময় তাঁর হাতে সেলফি স্টিক ছিল। পুরো ঘটনা ভিডিও করেন জ্যাকব। আপলোড করেন নিজের চ্যানেলে।
শুরুতে মনে হয়েছিল, এটা নিছকই একটা দুর্ঘটনা। কিন্তু ইউটিউবে ভিডিও আপলোড এবং ক্যাপশন দেখে সবাই বুঝতে পারেন, পুরোটাই ছিল সাজানো। নিজের চ্যানেলের ভিউ বাড়াতে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন তিনি। এতে সফলও হন তিনি। প্রায় ৩০ লাখ মানুষ ইউটিউবে জ্যাকবের ওই ভিডিও দেখেন।
ওই ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পর তদন্তে নামেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড ও ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফএম) সদস্যরা। ইচ্ছাকৃতভাবে উড়োজাহাজ ধ্বংস করা ও ধ্বংসাবশেষ নষ্ট করার অভিযোগ আনা হয় জ্যাকবের বিরুদ্ধে। গত বছরের এপ্রিলে পাইলট হিসেবে জ্যাকবের লাইসেন্স বাতিল করে এফএএ।
পরে জ্যাকব স্বীকার করে নেন যে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে ইউটিউব ভিডিও বানাতে এই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন তিনি। পরে ফেডারেল তদন্তকারীদের অসহযোগিতা করেছেন, মিথ্যা বলেছেন। মার্কিন বিচার বিভাগের এক বিবৃতিতে এসব জানানো হয়েছে।
এখন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে জ্যাকবের ২০ বছরের বেশি সময়ের কারাদণ্ড হতে পারে।