NFC কি?
NFC বলতে “Near Field Communication” কে বুঝায়। নামেই কথা বলে, এটা দ্বারা অনেক কম দূরত্বের দুটি ডিভাইসের মধ্যে কমিউনিকেট করা যায়।মোটামুটি দুটি ডিভাইসকে জড়াজড়ি অবস্থায় রাখলেই হয়।
এই কমিউনিকেশনের জন্য একটা ট্রান্সমিটিং ডিভাইস লাগে আর আরেকটা লাগে যেটা সিগন্যাল রিসিভ করে।জিনিসটা আসলে ব্লুটুথের মত মনে হলেও ব্লুটুথ না। চলেন তাইলে এগুলা বুঝতে ফিজিক্স ক্লাস করি আজকে।
NFC ডিভাইস আসলে দুই ধরনের
- Active ও
- Passive.আবার স্ট্যান্ডার্ড ডিভাইসগুলা Active, Passive দুইভাবেই আচরন করতে পারে
এখন Active কোনগুলা আর Passive কোনগুলা?
Passive NFC ডিভাইসগুলা হল বিভিন্ন ট্যাগ[1] (হ্যাশট্যাগ না কিন্তু আবার) এবং ছোটছোট ট্রান্সমিটার যেগুলো active ডিভাইসে বিভিন্ন ড্যাটা পাঠাতে পারে, কিন্তু তাদের কোন ধরনের ব্যাটারি থাকেনা বা পাওয়ার সাপ্লাইও না!অর্থাৎ কোন ধরনের শক্তি ছাড়াই এটা ড্যাটা ট্রান্সমিট করতে পারে!
কি? তব্দা খাইলেন? এরকম জিনিস আগে কখনো শুনেন নাই? আসলে শুনসেন, এটা ক্লাস ৯-১০ এর সিম্পল ফিজিক্স 😛
Passive Device অন্য Passive Device এর সাথে কানেক্ট হতে পারেনা, এরা কোন ধরনের ড্যাটা প্রসেসও করতে পারে না(যদি না হাইলি প্রোগ্রামড জিনিসপাতি হয়), শুধু পাঠাতে পারে।
Active ডিভাইস ড্যাটা সেন্ডও করতে পারে, রিসিভও করতে পারে। দুইটা Active Device নিজেদের মধ্যেও কানেক্ট হতে পারে। NFC এখন স্মার্টফোনে ব্যবহ্রত হলেও এগুলা আগে থেকেই পাবলিক ট্রান্সপোর্ট কার্ড রিডার, টাচ পেমেন্ট টার্মিনালে ব্যবহার করা হয় (বাংলাদেশে না আর কি)।
NFC কিভাবে কাজ করে আর Passive Device কিভাবে পাওয়ার সাপ্লাই ছাড়া ড্যাটা দেয়?
ব্লুটুথ, ওয়াই-ফাই সবধরনের ওয়ারলেস সিগন্যালের মত NFC ও বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে ড্যাটা পাঠায়(হিহি, ফিজিক্স ক্লাস নিতাসি :p)। তবে NFC টেকনলজি পুরানো RFID (Radio-frequency identification) এর ভিত্তিতে তৈরি যা তড়িৎচৌম্বকীয় আবেশের মাধ্যমে ইনফরমেশন ট্রান্সমিট করে।
NFC এর সাথে Bluetooth/WiFi এর এখানে পার্থক্য আছে। কোন Active Device তড়িৎচৌম্বকীয় আবেশের মাধ্যমে ইনফরমেশন ট্রান্সমিট করে,সেহেতু একইসাথে passive component কে তড়িত আবেশিত করতে পারে। ফলে passive component ড্যাটা দেয়ার মত যথেষ্ট শক্তি তড়িৎচৌম্বকীয় আবেশ থেকে পেয়ে যায় এবং এটার বাড়তি কোন পাওয়ার সোর্সের দরকার পড়েনা। তবে এজন্য দুইটা ডিভাইসকেই অনেক কাছে আনতে হয়।
এখন এটা পড়ে নিশ্চয় আপনার ‘বিশিষ্ট’ কম্পনা শুরু হয়ে গেসে, ইস, এভাবে যদি ফোনও চার্জ দেয়া যেত! যদিও NFC technology ফোন চার্জ দেয়ার মত এতবেশি আবেশ সৃষ্টি করতে পারেনা, তবে মনে রাইখেন, আরো নতুন টেকনলজি QI charging কিন্তু একইভাবেই কাজ করে।
আরও পড়ুন নতুন ভোটার আইডি কার্ড চেক।
যদিও মনে হচ্ছে NFC -র কোন দরকার নাই, কারণ এটা অনেক কম দূরত্বে কাজ করে (১০ সেমি)। তারচেয়ে ব্লুটুথ ১০ মিটারের মধ্যে কাজ করে,NFC এর চেয়ে দ্রুত ড্যাটা ট্রান্সফারও করে(NFC 424 kbit/s, Bluetooth2.1 2.1 Mbit/s )
কিন্তু NFC অনেক কম পাওয়ার খরচ করে, এমনকি Bluetooth 4.0 থেকেও যার নাম Bluetooth low energy.
আবার দ্রুত কানেক্ট হওয়ার ক্ষেত্রে NFC এগিয়ে কারণ এটা পেয়ারিং-এর ঝামেলায় যায়না। এর ‘inductive coupling’ এক সেকেন্ডের দশভাগের একভাগ সময়ে দুইটা ডিভাইস কানেক্ট করে ফেলতে পারে!
খেয়াল করে দেখবেন বিভিন্ন ওয়াইফাই ট্রান্সফার এপ্লিকেশনে NFC দিয়ে কানেক্ট করে, তারপর ওয়াইফাই দিয়ে ফাইল ট্রান্সফার করে, কারণ দুইটা প্রযুক্তিই দুইদিকে দ্রুততর।
NFC এর ব্যবহারঃ
ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, গুগল ওয়ালেট ইত্যাদিতে NFC ব্যবহার করা হয়।শুধু স্ক্যানিং ডিভাইসের কাছে নিবেন, কাজ শেষ!আর ড্যাটা ট্রান্সফারের জন্য এটা স্লো হবে, তবে বিভিন্ন কন্ট্যাক্ট ইনফরমেশন সহজেই ট্রান্সফার করা যাবে।